যুদ্ধাপরাধ মামলার আসামিদের ফাঁসি না দিতে তুরস্কের অনুরোধের বিষয়ে তুমুল আলোচনার মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, বিচার বন্ধ করার কথা কেউ বাংলাদেশকে বলেনি।
শুক্রবার রাজধানীর জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ জিমনেশিয়ামে বাংলাদেশ তায়কোয়ানদো ফেডারেশনের এক অনুষ্ঠান শেষে এ বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া জানতে চান সাংবাদিকরা।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধের কথা কেউ বলেনি।”
সাংবাদিকরা এর পরও প্রশ্ন করলে মন্ত্রী রোববার তার অফিসে যেতে বলেন।
শুক্রবার গণমাধ্যমে প্রকাশিত এক খবরে বলা হয়, জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির গোলাম আযমসহ মানবতাবিরোধী মামলার আসামিদের মৃত্যুদণ্ড না দিতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ গুল।
জবাবে বাংলাদেশ জানিয়েছে, তুরস্কের এই অনুরোধ অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের শামিল।
অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশে দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত লি ইয়ুন ইয়ং ও তায়কোয়ানদো ফেডারেশনের সভাপতি কাজী মোর্শেদ হোসেন কামাল অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর এই ট্রাইব্যুনাল গঠন করে যুদ্ধাপরাধের বহু প্রতিক্ষিত বিচার কাজ শুরু হয়।
বর্তমানে জামায়াতে ইসলামীর সাবেক ও বর্তমান আমিরসহ ১০ নেতা এবং বিএনপির দুই নেতার বিচার চলছে একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিভিন্ন দেশ এই ট্রাইব্যুনালের স্বচ্ছতা ও বিচারের মান বজায় রাখার বিষয়ে কথা বললেও এই প্রথম কোনো দেশ আনুষ্ঠানিকভাবে সাজা নিয়ে এ ধরনের কোনো কথা বললো।
এর আগে তুরস্কের একটি প্রতিনিধি দল অনুমতি ছাড়াই ২৪ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গিয়ে বিচার কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করেন। পরে তারা জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির গোলাম আযম ও নায়েবে আমির মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর সঙ্গে ‘শুভেচ্ছা বিনিময়’ করেন বলে গণমাধ্যমে খবর আসে। তুরস্কের প্রতিনিধি দলের এই ভূমিকা নিয়েও সমালোচনার ঝড় ওঠে।
এই পরিপ্রেক্ষিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি পরদিন সাংবাদিকদের বলেন, তুরস্কের ১৪ সদস্যের ওই এনজিও প্রতিনিধিদল ‘অন-অ্যারাইভ্যাল ভিসা’ নিয়ে যুদ্ধাপরাধীদের পে লবিং করতে যদি বাংলাদেশে এসে থাকেন, তাহলে সেটি নিশ্চয়ই সঠিক কাজ হয়নি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারটি খতিয়ে দেখবে।