আজ || শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪
শিরোনাম :
  গোপালপুরে ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মোমেনের পদত্যাগ       উত্তর টাঙ্গাইল নূরানী মাদরাসার বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদান       গোপালপুরে জাতীয় দুর্যোগ প্রস্তুতি দিবস উদযাপন       গোপালপুরে নানা আয়োজনে আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালিত       গোপালপুরে পৃথক সড়ক দূর্ঘটনায় শিশু ও নারী নিহত       গোপালপুরে অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে নগদ অর্থ প্রদান       গোপালপুরে জাতীয় সংসদ সদস্য ছোট মনির সংবর্ধিত       এ হয়রানির শেষ কোথায়! তদন্তে নির্দোষ, তবুও বন্ধ বেতনভাতা       গোপালপুরে ২০১ গম্বুজ মসজিদ চত্বরে পুলিশ বক্স স্থাপন       হেমনগর জমিদারের একাল-সেকাল’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন    
 


গোপালপুরে লুট হয়ে যাচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্পের নদী খননের মাটি

গোপালপুর বার্তা ডেক্স :

প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় গোপালপুর উপজেলায় শুরু হওয়া বৈরাণ নদীর খননকৃত স্তুপাকার করে রাখা মাটিগুলো লুট হয়ে যাচ্ছে প্রকাশ্য দিবালোকে। ফলে নদীর দুই পাড়ের বাঁধকাম সড়ক, ফলদ বৃক্ষায়ন ও সুদৃশ্য ওয়াকওয়ে নির্মাণে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে!

জানা যায়, পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় নদীর নাব্যতা পুনরুদ্ধার, পানিপথে যোগাযোগ চালু এবং দূষণ প্রতিরোধে বহুল প্রত্যাশিত উত্তর টাঙ্গাইলের বৈরাণ নদী খনন করছে। গত সেপ্টেম্বরে প্রায় ৮ কোটি টাকা ব্যয়ে তিন ফেজে ২৮ কিলোমিটার নদী খননের কাজ শুরু হয়। আগামী জুনের দিকে এ খনন কাজ শেষ হবে। এ নদী খননের দায়িত্বে কাজ করছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান তাজ, টিটিসিএল এবং পিবিএল কোম্পানী লিমেটেড। ইতিমধ্যে খননের প্রায় ৭০ ভাগ কাজ শেষ করেছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানগুলো।

টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ড অফিস সুত্রে জানা যায়, নদীর উভয় তীরে খনন করা মাটি স্তুপাকারে রাখা হয়েছে। এসব মাটি ড্রেসিং করে পরিকল্পিতভাবে তৈরি করা হবে বাঁধ কামসড়ক। নির্মাণ হবে সুদৃশ্য ওয়াকওয়ে। বাঁধ হবে ফলদ চারায় বৃক্ষায়ন।

গোপালপুর উপজেলার গনিপুর গ্রামের শিক্ষক রমজান আলী জানান, প্রতিদিন প্রকাশ্যেই লুট হচ্ছে নদীর দুই পাড়ে স্তুপাকার করে রাখা খননের এসব মাটি। ইটভাটাসহ মাটি চালান যাচ্ছে পার্শ্ববর্তী উপজেলাসহ নানাস্থানে।

ভাদুড়ীচর গ্রামের ফেরদৌস হোসেন জানান, ইউপি মেম্বার সবুর হোসেনের মাধ্যমে প্রতি ট্রাক ৫০০ টাকা দরে তিনি ৭০ ট্রাক মাটি কিনেছেন। দাম কম থাকায় এ মাটি প্রায় অনেকেই কিনছে। আর ঠিকাদারের ভেকু ও ভাড়ার চালিত ট্রাক দিয়ে মাটি পৌঁছে দিচ্ছে গ্রাহকের প্রান্তে।

হাদিরা হাতেম আলী হাইস্কুলের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আতিকুর রহমান জানান, নদী খননের সময় ঠিকাদাররা ড্রেজার দিয়ে বিপুল পরিমান মাটি নদীর দুই পাড়ে গৃহস্তের বাড়ি, উঠান ও জমিতে স্তুপাকারে ফেলে রাখে। এতে অনেকের ফসল ও গাছপালা বিনষ্ট হয়। কিন্তু কর্তৃপক্ষের নিকট লিখিত আবেদন করেও কেউ কোন ক্ষতিপূরণ পায়নি। এখন আবার প্রচুর ফলফসল বিনষ্ট হচ্ছে বেপরোয়ভাবে ট্রাকে মাটি লুট করার।

মধ্যভাদুড়ীচরের ব্যবসায়ী মেজবাহ উদ্দীন অভিযোগ করেন, মাটি লুট করায় প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্প ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এরা প্রভাবশালী হওয়ায় স্থানীয় প্রশাসন ব্যবস্থা নিচ্ছেনা।

হাদিরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুল কাদের তালুকদার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, তার পরিষদের এক মেম্বার মাটি পাচারের সাথে জড়িত বলে জনগণ তাকে জানিয়েছে। ওই ইউপি মেম্বারকে তিনি এ জন্য শাসিয়েছেন। মাটি লুট হলে বন্ধ হয়ে যাবে বাঁধকাম সড়ক নির্মাণ। ভেস্তে যাবে প্রকল্পের উদ্দেশ্য। ভেঙ্গে যাবে পানিপথে যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু হওয়ার কাঙ্খতি স্বপ্ন।

টাঙ্গাইল জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সিরাজুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতাধীন ‘৬৪ জেলার অভ্যন্তরস্থ ছোট নদী, খাল এবং জলাশয় পূনঃখনন উপপ্রকল্প (প্রথম পর্যায়)’ এর মাটি পাচার বন্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিকাশ বিশ্বাস জানান, মাটি পাচার বন্ধের জন্য জেলা প্রশাসক তাকে আজ নির্দেশ দিয়েছেন। একজন তহশীলদারকে সেখানে পাঠানো হয়েছে। মাটি পাচার বন্ধ করা হবে।

টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসক মো. শহীদুল ইসলাম জানান, গোপালপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। বিকাল থেকে অবৈধভাবে মাটি বিক্রি হয়ে গেছে। বাঁধকাম সড়ক নির্মাণের পর সারপ্লাস মাটি বেঁচে গেলে নীলামের মাধ্যমে তা বিক্রির ব্যবস্থা করা হবে।

মন্তব্য করুন -


Top
error: Content is protected !!