– জয়নাল আবেদীন
পাখির অভয়াশ্রম পাকুটিয়া। বাঁশ ঝাড় আর গাছপালায় ঢেকে থাকা সারি সারি বাড়িঘর। ঝাওয়াইল ইউনিয়নের ঝিনাই পাড়ের ঐতিহ্যবাহী গ্রাম। জারী, সারি আর ধুঁয়া গানের জন্যও বিখ্যাত। কামার ও কুমার শিল্পের বিকাশ ঘটেছে কয়েক শতাব্দী আগে। যমুনার শাখা ঝিনাই গ্রামের মৎস্যজীবিদের খোরাক জোগাতো। নদীর তলদেশে মিলতো ঝিনুক। ঝিনুক থেকে নদীর নাম ঝিনাই। নদীপাড়ের মানুষ ঝিনুক থেকে সংগ্রহ করতো মুক্তা। আর ঝিনুক পুড়িয়ে চুন। ফারাক্কা বাঁধের কারণে যমুনা মরতে শুরু করলে ঝিনাই ক্ষীনকায়া হয়ে পড়ে। এখন নদীতে মাছ মেলেনা। ঝিনুকের দেখা নেই। চুন তৈরি ও বন্ধ। এখনো কয়েক ঘর কামার ও কুমার পৈত্রিক পেশা ধরে রাখার জন্য সংগ্রাম করে যাচ্ছে। শুস্ক মৌসুমে এ গ্রাম ঘিরে বহমান সর্পিল ঝিনাই শুকিয়ে কাঁঠ হয়ে যায়। বর্ষায় প্রাণ ফিরে পায়। তখন ভরাট বুক জুড়ে আসা প্লাবনের জোয়ারে পাড় ভাঙ্গে। ভাঙ্গে বাঁধ। বিলীন হয় আবাদী জমি, বাড়িঘর, দোকানপাট, চিকিৎসালয়, মসজিদ ও মন্দির। এক দশক ধরে এভাবেই ক্ষয়ে যাচ্ছে পাকুটিয়া। পাকুটিয়া-ভেঙ্গুলা সড়ক নদীগর্ভে নিমজ্জিত হওয়ায় বেচাকেনার জন্য ভেঙ্গুলা হাটে যাওয়া বন্ধ। পাকুটিয়া-ঝাওয়াইল সড়ক নদীভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ঝাওয়াইল বাজার ও উপজেলা সদরে যোগাযোগ কষ্টসাধ্য। নদীর দুপাড়ের মানুষের একমাত্র মেল বন্ধন ঝিনাই সেতু সম্প্রতি ধসে পড়ায় গ্রামবাসি অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে। শিশুরা স্কুলে যেতে পারেনা। কৃষকরা পণ্য নিয়ে হাটবাজারে যেতে পারেনা। গ্রামের প্রবীন ব্যক্তি আব্দুস সামাদ জানান, গ্রামের স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি এখন নদীগর্ভে বিলীণ হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ইউনুস ইসলাম তালুকদার স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত পাকুটিয়া গ্রাম পরিদর্শন করেন। তিনি গ্রামবাসিকে আশ্বস্ত করেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে নদীভাঙ্গনরোধ এবং ধসে পড়া ব্রিজের স্থলে নতুন ব্রিজ নির্মানের ব্যবস্থা করাবেন ।